এবার ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনায় মাস্ক, কর বিলকে বললেন ‘জঘন্য’

News Desk

এবার ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনায় মাস্ক, কর বিলকে বললেন ‘জঘন্য’. Dhakainlight.com

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর ও ব্যয় বিলকে ‘জঘন্য জিনিস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক এই কঠোর সমালোচনা করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বাজেট পরিকল্পনা নিয়ে এ মন্তব্যে দুজনের মধ্যকার সম্পর্কের আরও অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেট বিলে বিপুল পরিমাণ করছাড়, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং সরকারের ঋণ গ্রহণের সীমা প্রসারিত করার প্রস্তাব রয়েছে। গত মাসে বিলটি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়। তবে এ প্রস্তাব নিয়ে বিরোধিতা করেন মাস্ক। তিনি এক্সে লেখেন, “যাঁরা এতে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ধিক্কার জানাই।”

ইলন মাস্ক সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগে’ ১২৯ দিন দায়িত্ব পালন করার পর পদত্যাগ করেছেন। ওই বিভাগের প্রধান হিসেবে তাঁর মূল দায়িত্ব ছিল সরকারি ব্যয় কমানো। দায়িত্ব ছাড়ার পর এটি তাঁর প্রথম প্রকাশ্য ট্রাম্পবিরোধী মন্তব্য।

মাস্ক বলেন, এ বাজেট পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আরও বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে নাগরিকদের ওপর বিপুল ঋণের চাপ সৃষ্টি করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সরকারের ব্যয়ের পরিমাণ রাজস্ব আয়ের তুলনায় ৬০ হাজার কোটি ডলার বেশি হবে, যা বাজেট ঘাটতিকে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে ঠেলে দেবে।

ট্রাম্প যদিও এই বিলকে ‘দারুণ’ বলেছেন এবং দাবি করেছেন মাস্ক তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকবেন, মাস্কের মন্তব্যে স্পষ্ট হচ্ছে বাস্তবতা ভিন্ন। মাস্ক বলেছেন, যারা এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি আগামী বছরের নির্বাচনে অবস্থান নেবেন এবং বিশ্বাসঘাতকারা কেউ যেন পুনরায় নির্বাচিত না হন, সে লক্ষ্যে কাজ করবেন।

এই কর ও ব্যয় বিল ঘিরে রিপাবলিকান দলের অভ্যন্তরেও মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদে আলোচনার সময় অনেক রিপাবলিকান সদস্যই বিলটির বিরোধিতা করেছিলেন। এখন সিনেটে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং সেখানেও বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, “ইলন মাস্কের অবস্থান সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট অবগত আছেন। এটি একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বিল, এবং প্রেসিডেন্ট এতে অনড়।”

মাস্কের একাধিক পোস্টে স্পষ্ট হয়েছে, তিনি এ বিলকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিপজ্জনক মনে করছেন। তাঁর ভাষায়, এটি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। ফলে বিলের সমালোচনায় এখন তিনি কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, রাজনৈতিক পর্যায়েও সরব হচ্ছেন।

মার্কিন রাজনীতিতে এই ঘটনাটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে—বিশেষ করে যখন একজন প্রভাবশালী ধনকুবের যিনি পূর্বে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই এখন স্পষ্টভাবে বিরোধিতার অবস্থানে। এই অবস্থান ট্রাম্পের আগামী নির্বাচনী প্রচারে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

Footer Section