২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। আজ বুধবার গুলশানে সংগঠনটির কার্যালয়ে বাজেট-পরবর্তী এক পর্যালোচনায় এ মন্তব্য করেন ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার।
জাভেদ আখতার বলেন, এই বাজেটে করজাল সম্প্রসারণের কার্যকর নির্দেশনা নেই, বরং বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করের বোঝা আরও বাড়ানো হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকারের পক্ষ থেকেই যখন বলা হয় এটি প্রবৃদ্ধির বাজেট নয়, তখন নতুন বিনিয়োগ কে করবে? তাঁর মতে, ব্যবসার পরিবেশ তৈরিতে এই বাজেট আস্থা যোগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি বাজেটেও কর বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল। এবারও তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার বাড়ানো হয়েছে আড়াই শতাংশ। এতে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একইসঙ্গে বেভারেজ, সিগারেট ও শিশুখাদ্যের ওপর কর বাড়ায় মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে।
বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাভেদ আখতার বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ পাকিস্তানের চেয়েও কম, যা দুঃখজনক। তাঁর মতে, বিনিয়োগ বাড়াতে হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতির ধারাবাহিকতা এবং কাগজপত্র অনুমোদনের প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী বলেন, সরকার করহার বাড়িয়ে সৎ করদাতাদের শাস্তি দিচ্ছে, অথচ যারা কর ফাঁকি দেয়, তাদের করজালে আনার কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। এনবিআরের মূল কাজ হওয়া উচিত ছিল নতুন করদাতা চিহ্নিত করে করজাল সম্প্রসারণ।
আরেক সাবেক সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাজেটে রাজস্ব প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে কর আদায়ে প্রায় ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লাগবে। করহার বাড়িয়ে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। বরং করহার কমিয়ে করযোগ্য ব্যক্তিদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
বাজেট বাস্তবায়ন ও রাজস্ব আহরণে বিশ্বাসযোগ্য নীতি ও পরিবেশ নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংগঠনটি। বক্তারা বলেন, কর ফাঁকি রোধ, নিয়মিত করদাতাদের উৎসাহ এবং ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের দিকেই নজর দেওয়া উচিত ছিল সরকারের।